নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটাররা বড়ই হয়েছে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় নিজেদের অসহায় সংগ্রাম নিয়ে। কিন্তু ব্ল্যাক ক্যাপরা বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পর এখন তাদের ‘বিগ ব্রাদার’দের বিরুদ্ধে আরেকটি লড়াইয়ে জিততে চায়। আগামীকাল রবিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) অনুষ্ঠেয় ক্রিকেটের এই মহাযজ্ঞটির প্রাক্কালে নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি এ অভিপ্রায়ের কথা জানান।
তাসমান সাগর তীরবর্তী এ দু’টি দেশের মধ্যে সব খেলাতেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বিদ্যমান। তবে আগামীকাল রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালটি খুব বেশি উত্তাপ ছড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাউদি বলেন, ‘সব ধরনের খেলাতেই অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এবং এটা হবে আরো তীব্র। ওপার থেকে সম্ভবত আমাদেরকে ছোট ভাই হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। যদিও আমরা অন্য খেলাগুলোয় ভালোই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি।’
সাউদি আরো বলেন, ‘অবশ্যই গত কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে আমাদের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েছে। তবে ধীরে ধীরে হলেও আমরা দৃশ্যপটটা বদলাতে শুরু করেছি। বাচ্চা বয়স থেকে বড় হওয়ার পথে সবসময়েই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই খেলতে চাইতাম। এ ক্ষেত্রে আমরা বাড়ির পাশে কারো বিপক্ষে খেলে থাকলে সেই লড়াইটাও চাইতাম যেন নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া হয়।’
সাউদি আরো বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে আপনি যে খেলাই খেলেন না কেন তার মধ্যে তীব্র রেষারেষির ব্যাপার থাকে এবং আমি মনে করি এ ক্ষেত্রে আপনি সবসময়ই ‘বিগ ব্রাদার’ (অস্ট্রেলিয়া) এর মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এক ধাপ এগিয়ে যেতে চাইবেন।’
গত বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করা চারবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া আগামীকালকের ফাইনালেও ফেভারিট থাকছে। কেননা শিরোপার চূড়ান্ত লড়াইয়ে তারা খেলবে নিজেদের পরিচিত উইকেট ও কন্ডিশনে এবং নিজ সমর্থকদের সামনে। তাই বলে আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই দাপটের সঙ্গে খেলে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছানো নিউজিল্যান্ডের।
তাছাড়া দলকে দারুণভাবে নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি চরম আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছেন ব্ল্যাক ক্যাপস অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। ফাইনাল নিশ্চিতের রাস্তায় এখন পর্যন্ত কোনো খেলায় হার না মানা দলটি ফাইনালেও তাদের প্রতিবেশীকে পরাজিত করতে চায়। তাছাড়া ইতোমধ্যে গ্রুপ পর্বেও বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দলটিকে এক উইকেটে হারিয়েছে ম্যাককালামের দল। সব মিলিয়ে তারা মনে করে পড়শীদের তরফেও সমীহ আদায়ে সক্ষম হয়েছে।
সাউদি বলেন, ‘অতিক্রান্ত দুই বছরে আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে খেলতে পারিনি। তারপরও অস্ট্রেলিয়াকে আমরা সম্মান করি। কেননা তারা মান সম্পন্ন একটি দল। তারা তো আর এমনি এমনিতে বিশ্বের এক নম্বর দল হয়নি। ’
কালকের ফাইনালটিই হবে চলতি আসরে নিউজিল্যান্ডের জন্য নিজ দেশের বাইরে খেলা একমাত্র ম্যাচ। সেই সঙ্গে মেলবোর্নে এটাই হবে তাদের গত ছয় বছরের মধ্যে প্রথম খেলা। এর আগে ২০০৯ সালে এই ভেন্যুতে সর্বশেষ লড়াইয়ে ছয় উইকেটে স্বাগতিকদের হারিয়ে দিয়েছিলো ব্ল্যাক ক্যাপসরা।
ফাইনালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রায় এক লাখ সমর্থকের উপস্থিতি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে তা হলো, মেলবোর্নের বড় মাঠ। নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনাল পর্যন্ত নিজেদের ছোট পরিসরের মাঠে খেললেও ফাইনালে বড় পরিসরের ভেন্যুতে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে কি-না এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। তবে সাউদি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের মাঠগুলো ছোট হলেও কয়েকটি বড় মাঠেও খেলেছি আমরা। তাই মাঠের আয়তন নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই।’সংগৃহীত
3:29 PM
Share: