নেইমার দা সিল্ভা স্যান্তোস জুনিয়র জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি
১৯৯২,সাধারণত নেইমার নামে পরিচিত, একজনব্রাজিলীয় পেশাদার ফুটবলার, যিনি স্পেনীয় ক্লাব বার্সেলোনা এবং ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে একজন ফরোয়ার্ড বা উইঙ্গার হিসেবে খেলেন। তিনি আধুনিক বিশ্বের উদীয়মান ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম।

২০১০ সালে ৩য় হওয়ার পর নেইমার ১৯ বছর বয়সে ২০১১ এবং ২০১২ সালে দক্ষিণ
আমেরিকার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন।২০১১ সালে নেইমার ফিফা
ব্যালন ডি'অরের জন্য মনোনয়ন পান,
তবে ১০ম স্থানে আসেন। তিনি ফিফা পুস্কাস পুরষ্কারও
অর্জন করেন।তিনি সর্বাধিক পরিচিত
তাঁর ত্বরণ, গতি, বল কাটানো, সম্পূর্ণতা এবং উভয় পায়ের ক্ষমতার জন্য। তাঁর খেলার ধরন তাকে এনে দিয়েছে
সমালোচকদের প্রশংসা, সাথে প্রচুর ভক্ত, মিডিয়া এবং সাবেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার পেলের সঙ্গে তুলনা। পেলে নেইমার
সম্পর্কে বলেন, "একজন অসাধারন খেলোয়ার।" অন্যদিকে রোনালদিনহো বলেন, "নেইমার হবে বিশ্বসেরা।"

নেইমার সান্তসে (ব্রাজিলিয়ান ক্লাব) যোগ দেন ২০০৩-এ। বিভিন্ন মর্যাদাক্রম
অতিক্রম করে তিনি মূলদলে নিজের যায়গা করে নেন। তিনি সান্তসের হয়ে প্রথম আবির্ভাব
করেন ২০০৯ সালে। ২০০৯ সালে তিনি কম্পেনাতো পুলিস্তার শ্রেষ্ঠ যুবা খেলোয়ার
নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে সান্তসের ২০১০ কম্পেনাতো পুলিস্তা জয়, নেইমারের শ্রেষ্ঠ খেলোয়ার নির্বাচিত হওয়া এবং ২০১০ কোপা দো ব্রাজিলে ১১
গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা পুরষ্কার পান। তিনি ২০১০ সাল শেষ করেন ৬০ খেলায় ৪২ গোল
করার মাধ্যমে।নেইমার ব্রাজিল অনূর্ধ্ব ১৭,
অনূর্ধ্ব ২০ এবং ব্রাজিল মূল দলের প্রতিনিধিত্ব
করেছেন।
নেইমার ডা সিল্ভা জন্মগ্রহণ করেন সাও পাওলো, ব্রাজিলে সিনিয়র নেইমার ডা
সিল্ভা এবং নান্দিনি সান্তসের ঘরে। তিনি তাঁর পিতার নামের অনুসারে নাম পান, যিনি একজন প্রাক্তন ফুটবলার
এবং পরবর্তীতে নেইমারের পরামর্শক যখন নেইমার তাঁর প্রতিভা দেখানো শুরু করলেন।
নেইমার তাঁর পিতার ভুমিকা সম্পর্কে বলেন, "আমার
পিতা আমার পাশেই থাকেন সেই ছোটবেলা থেকেই, তিনি
সবকিছুর খেয়াল রাখেন, আমার
সঙ্গিনী এবং আমার পরিবারের।
২০০৩ সালে, নেইমার
তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাঁও ভিসেন্তে চলে আসেন। সেখানে তিনি যুব পর্তুগিসা
সানতিস্তাতে খেলা শুরু করেন। ২০০৩ এর শেষে তাঁরা সান্তসে চলে আসেন। সেখানে নেইমার
সান্তস ফুটবল ক্লাবে যোগ দেন।
যৌবন


৩০-ই জুলাই ২০১৩, এক প্রি-সিজন ফ্র্যান্ডলি ম্যাচে বার্সেলোনা লেচিয়া দান্সকের বিপক্ষে ২-২
গোলে ড্র করে। এই ম্যাচে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নেইমার আনঅফিসিয়ালি বার্সেলোনার
জার্সি গায়ে অভিষেক ম্যাচ খেলেন। ৭-ই আগস্ট ২০১৩, নেইমার ব্যাংককে অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ড জাতীয় দলের বিপক্ষে বন্ধুত্যপূর্ণ
ম্যাচে প্রথম গোল করেন। যেটাতে বার্সেলোনা ৭-১ গোলে জয়লাভ করে।
নেইমার বার্সেলোনার হয়ে তাঁর প্রতিযোগিতামূলক অভিষেক ম্যাচ খেলেন ২০১৩-১৪
লা লিগায় লেভান্তের বিপক্ষে ৬৩ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে।এই ম্যাচে বার্সেলোনা
৭-০ গোলে জয়লাভ করে। ২১-ই আগস্ট ২০১৩,
সুপার কোপা ডে এস্পানায় অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের
বিপক্ষে তিনি বার্সেলোনার হয়ে প্রথম গোল করেন ।১৮-ই সেপ্টেম্বর তার
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে অভিষেক হয় আয়াক্সের বিপক্ষে যা ছিল ২০১৩-১৪ মৌসুমে
চ্যাম্পিয়ন্স লীগের বার্সেলোনার প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচে তিনি জেরার্ড
পিকেকে এসিস্ট করেন একটি গোলে,
সেই ম্যাচে বার্সেলোনার ৪-০ তে জয়লাভ করে। ২৪-ই
সেপ্টেম্বর তিনি লা লিগায় প্রথম গোল করে ক্যাম্প ন্যু-তে রিয়াল সসিয়েদাদের
বিপক্ষে, সেই ম্যাচে বার্সেলোনা ৪-১ গোলে জয়লাভ করে।
২৬-ই অক্টোবর ২০১৩,
নেইমার তাঁর অভিষেক এল ক্লাসিকোতে প্রথম গোল করেন, এই ম্যাচে বার্সেলোনা তাদের প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদকে ন্যু ক্যাম্পে
হারিয়েছিল ২-১ গোলে।

ব্রাজিল অনূর্ধ্ব ১৭ দলের হয়ে ২০০৯ অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপে নেইমারের
পারফরম্যান্স দেখে, যেখানে তিনি জাপানের বিপক্ষে উদ্বোধনকালীন ম্যাচে গোল করেন, প্রাক্তন ব্রাজিলিয়ান ফুটবল খেলোয়াড় পেলে এবং রোমারিও তৎকালীন ব্রাজিল
জাতীয় দলের কোচ দুঙ্গাকে ঘন ঘন চাপ দিতে থাকেন যাতে নেইমারকে তিনি ২০১০ বিশ্বকাপ
স্কয়াডে রাখেন। যদিও নেইমার দুঙ্গার স্কয়াডে জায়গা পাওয়ার উপজুক্ত এই ব্যাপারে
সুদূরপ্রসারী মতামত এবং ১৪০০০ স্বাক্ষরকৃত দরখাস্ত জমা হওয়ার পরও, এবং দুঙ্গার উপর নেইমারকে নেওয়ার ব্যাপারে প্রচুর চাপ অবজ্ঞা করে তাঁকে
প্রথম ২৩ জনের বিশ্বকাপের স্কয়াড তালিকা এবং অপেক্ষা তালিকা থেকে তাঁকে বাদ
দেওয়া হয়। যদিও দুঙ্গা নেইমারকে একজন "অসাধারণ প্রতিভা" বলে আখ্যায়িত
করেছেন, তিনি দাবি করেন নেইমারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিক্ষা করা হয়নি বিশকাপে
খেলতে পারার জন্য এবং তিনি তাঁর নিজের প্রতিভা বিকাশ করতে পারেননি যখন তাঁকে
জাতীয় দলে খেলতে দেওয়া হয়েছিল।
২৬-ই জুলাই ২০১০, নেইমারকে সর্বপ্রথম ব্রাজিল মূল দলে খেলার জন্য ডাকা হয় নতুন কোচ মানো
মেনেজেস কর্তৃক নিউ জার্সির ইস্ট রাদারফোর্ডে একটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। ১০-ই আগস্ট ২০১০,
মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি ওই ম্যাচে ব্রাজিল জাতীয়
দলের হয়ে অভিষেক করেন ম্যাচের শুরু থেকে ব্রাজিলের ১১ নম্বর জার্সি পড়ে। তিনি
তাঁর অভিষেক ম্যাচেই ২৮ মিনিটের মাথায় গোল করেন,আন্দ্রে সান্তসের
এসিস্ট থেকে হেড করে। ব্রাজিলের ২-০ গোলে জয়লাভ। ১-লা মার্চ ২০১১, নেইমার বলেন,
"ব্রাজিল দলের হয়ে খেলতে পারাটা আলাদা একটা
সম্মান। এখানে অনেক সেরা সেরা খেলোয়াড় রয়েছেন এবং আমি তাদের মাঝে তাদের সাথে
খেলতে পেরে অনেক খুশী।" ২৭-ই মার্চ ২০১১, তিনি আমিরাত
স্টেডিয়ামে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোল করে ব্রাজিলকে ২-০ গোলে জয় এনে দেন।
ম্যাচ চলাকালীন তাঁকে উদ্দেশ্য করে মাঠে কলা নিক্ষেপ করা হয় যখন তিনি পেনাল্টি
থেকে তাঁর দ্বিতীয় গোলটি করেন। তিনি স্কটল্যান্ড সমর্থকদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের
অভিযগ আনেন। অন্যদিকে স্কটিশ অফিসিয়ালরা এই ব্যাপারে ব্যাখ্যা করে বলেন যে, একা নেইমারকে মাঠে সমর্থকরা অবজ্ঞা করে কারন তিনি ইঞ্জুরির নাটক করেন। একজন
জার্মান ছাত্র, যে কলাটি নিক্ষেপ করেছে,
সে বলে,
"আমি কোন বর্ণবাদের মানসিকতায় কলাটি নিক্ষেপ
করিনি।" এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে স্কটিশ সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ
আনার জন্যে স্কটিশ ফুটবল এসোসিয়েশন ক্ষমা চাইতে বলে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল
কনফেডারেশনকে। কিন্তু নেইমার ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানান।

লুইজ ফিলিপে স্কলারির ব্রাজিল স্কোয়াডের হয়ে ঘরের মাটিতে ২০১৩ কনফেডারেশন
কাপে খেলার জন্য নির্বাচিত হন। পূর্বের ১১ নম্বর জার্সির পরিবর্তে তাঁকে ঐতিহাসিক
১০ নম্বর জার্সি পরতে দেওয়া হয়। ১৫-ই জুন ২০১৩, নেইমার প্রতিযোগিতার
প্রথম গোল করেন এস্তাদিও নেসিওনাল মানে গারিঞ্চাতে জাপানের বিপক্ষে, ব্রাজিলের ৩-০ গোলে জয়লাভ। ১৯-ই জুন ২০১৩, মেক্সিকোর বিপক্ষে
নেইমার ৯-ম মিনিটে গোল করেন এবং জো-কে এসিস্ট করে ব্রাজিলকে ২-০ গোলে জয় এনে দেন।
নেইমার প্রতিযোগিতার প্রতিটি ম্যাচে গোল করার ধারাবাহিকতার রেকর্ড বজায় রাখেন।
২২-ই জুন ২০১৩, তিনি ইতালির বিপক্ষে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে ব্রাজিলকে ৪-২ গোলে জয় এনে
দেন। ৩০-ই জুন ২০১৩, স্পেনের বিপক্ষে ফাইনালে নেইমার ব্রাজিলের দ্বিতীয় গোলটি করেন, ফাইনালে ব্রাজিল ৩-০ গোলে জয়লাভ করে। নেইমারের প্রতিযোগিতায় অসাধারণ
পারফর্মেন্সের জন্য তাঁকে সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার গোল্ডেন বল দেওয়া হয়।ওয়েবসাইট।
12:00 AM
Share: